শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

পড়াশোনা | EDUCATION: প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞান

Sumit | ২১ জুন ২০২৪ ১৮ : ৪৯Sumit Chakraborty


‌ড.‌ সুকান্ত বিশ্বাস : প্রাণীপালন ও চিকিৎসা বহু প্রাচীনকাল থেকে মানবসভ্যতা ও গ্রামীণ জীবন–জীবিকার আদি ও অকৃত্রিম অঙ্গ। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে প্রাণীপালন, প্রাণীবিজ্ঞান চর্চা ও এর চিকিৎসার গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিহাসে বলে, আধুনিক প্রাণী চিকিৎসা ও বিজ্ঞান বিষয়ক পড়াশোনার জন্য প্রথম ১৭৬১ সালে ফ্রান্সে রাজা পঞ্চদশ লুই একটি স্কুল স্থাপন করেন। তবে, ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে ১৮৬২ সালে গবাদিপশুর প্লেগ রোগ মহামারী ধারণ করায় পুণেতে সেনাবাহিনীর প্রাণী চিকিৎসা বিদ্যালয় স্থাপনার মাধ্যমে এই বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হয়। এরপর ভারতীয় গো–প্লেগ কমিশনের অনুমোদনে ব্রিটিশ সরকার একে একে লাহোর (‌১৮৮২)‌, বম্বে (‌১৮৮৬)‌, কলকাতা (‌১৮৯২)‌ ও মাদ্রাজে (‌১৯০৩)‌ পৃথক প্রাণী চিকিৎসা বিদ্যালয় স্থাপন করে। পরবর্তীতে চাহিদা বাড়তে থাকায় মাদ্রাজে ১৯৩৫ সালে ভেটেরিনারি কলেজ স্থাপন করে প্রথম স্নাতক স্তরীয় কোর্স চালু হয় এবং পরাধীন ভারতবর্ষে এভাবে নয়টি কলেজ গড়ে ওঠে।
বর্তমানে দেশের ১৫টি প্রাণী চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৫১টি প্রাণী চিকিৎসা কলেজ এবং ৪টি কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার অধীনে প্রাণীবিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিষয়ক স্নাতক (‌আন্ডারগ্র‌্যাজুয়েট)‌, স্নাতকোত্তর (‌পোস্ট গ্র‌্যাজুয়েট)‌ ও গবেষণা বিষয়ক (‌পিএইচডি)‌ পড়া ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
‘‌দুধ না খেলে, হবে না ভাল ছেলে’‌, গ্রামবাংলার এই প্রাচীন প্রবাদের সঙ্গে প্রাণীপালন ও চিকিৎসার সম্পর্ক অতি নিবিড় ও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকেই গ্রাম ও শহরের মানুষের সুষম খাদ্যে দুধ, ডিম ও মাংস অন্যতম প্রধান উপাদান। মানুষের জীবনধারণ ও জীবিকা অর্জনে প্রথাগত প্রাণীপালন এবং বর্তমানে বিপুল জনসংখ্যার প্রয়োজন অনুযায়ী সুষম খাদ্যের মূল উপাদান হিসেবে আরও বেশি পরিমাণে দুধ, ডিম ও মাংস জোগান দেওয়ার পাশাপাশি অধিক লাভের দ্বারা কর্মসংস্থানের পথ সুগম করার অন্যতম পন্থা হল প্রাণীপালন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিসাধন।
বর্তমানে পরিবর্তনশীল জলবায়ু ও আধুনিক রাসায়নিক সারনির্ভর কৃষিকাজে ক্রমহ্রাসমান উৎপাদনশীলতার প্রেক্ষাপটে উন্নত প্রাণীপালন ও প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রসার একটি উৎপাদনশীল ও লাভজনক বিকল্প পন্থা। আধুনিক ও ব্যবসায়িক ভিত্তিতে প্রাণীপালন বর্তমানে শুধু গ্রামীণ কৃষকের বিকল্প জীবিকার উৎস নয়, বরং উন্নয়নশীল ভারতবর্ষের বেকার যুবক–যুবতীদের কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এটি অন্যতম প্রধান উপজীব্য বিষয়।
ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান সংস্থা (‌আইসিএমআর)‌–এর অনুমোদন অনুযায়ী একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সুস্থ ও সবল থাকার জন্য দৈনিক ২৮০ মিলি দুধ, বছরে ১৮০টি ডিম ও ১১ কেজি মাংস খাওয়া আবশ্যক। এদেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত দুধ (মাথাপিছু ‌দৈনিক গড় ৪৫৯ মিলি)‌ উৎপাদিত হলেও মাথাপিছু বার্ষিক মাত্রই ১০১টি ডিম ও ৭ কেজি মাংস উৎপাদিত হয়। সেই হিসেবে আমাদের দেশে প্রাণীজ পুষ্টিকর খাবারের চাহিদার ঘাটতি পূরণের জন্য দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক প্রাণীপালন ও প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রসার ও প্রচার একান্ত প্রয়োজন।
প্রাচীনকাল থেকে মানুষ ও প্রাণীর সহাবস্থান ও জীবন–জীবিকার নিবিড় সম্পর্কের কারণে বিভিন্ন প্রাণীজ রোগব্যাধি যেমন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনই প্রচুর রোগব্যাধি প্রাণী থেকে মানুষে এবং মানুষ থেকে প্রাণীতে সংক্রামিত হয়ে উভয় দিকেই প্রাণহানি ও জীবন–জীবিকার প্রভূত ক্ষতিসাধন করছে। এক্ষেত্রে মানব চিকিৎসার সঙ্গে প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে প্রাণী চিকিৎসা বিষয়ক পড়াশোনা সেই মধ্যযুগে শুরু হয়ে আধুনিক ভারতবর্ষে‌ অনেকটাই বিস্তারলাভ করেছে। সঙ্গত কারণেই বর্তমানে প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞান ভারতবর্ষ তথা সমগ্র বিশ্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত চিকিৎসা ও উচ্চশিক্ষালব্ধ পড়াশোনা ও গবেষণার বিষয় হিসেবে পরিগণিত।

পড়ার সুযোগ কেমন
প্রাণী চিকিৎসা ও প্রাণীপালন (ব্যাচেলর ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজব্যান্ড্রি বা ‌BVSc & AH‌‌)‌ কোর্সটি ভারত সরকারের ভেটেরিনারি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (‌ভিসিআই, ওয়েবসাইট:‌ https://vci.dahd.gov.in/)‌ এবং নয়া দিল্লির ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ (‌আইসিএআর, ওয়েবসাইট:‌ https://icar.org.in/)‌ অনুমোদিত একটি পূর্ণাঙ্গ ৫½ বছরের ডিগ্রি কোর্স। এই কোর্সটি সারা ভারতের সমস্ত প্রাণী‌ চিকিৎসা বিজ্ঞান কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিআই অনুমোদিত সিলেবাস মেনে পড়ানো হয়।
এই কোর্সে ভর্তির আবশ্যক যোগ্যতামানের মধ্যে রয়েছে, ছাত্র বা ছাত্রীকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে কমপক্ষে ১৭ বছর বয়সী হতে হবে এবং পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের স্বীকৃত কোনও পর্ষদ (‌ডব্লিউবিসিএইচএসই, সিবিএসই বা আইসিএসই)‌ থেকে ১০+‌২ বোর্ড পরীক্ষায় ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি বা বায়োটেকনোলজি ও ইংরাজি বিষয়ের প্রতিটিতে পাশ করতে হবে। পাশাপাশি, এগ্রিগেটে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বরও থাকতে হবে। এই যোগ্যতায় সর্বভারতীয় মেডিক্যাল জয়েন্ট বা নিট পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলে মেধাতালিকা অনুযায়ী কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কোর্সে ভর্তির সুযোগ মেলে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পশ্চিমবঙ্গে ভিসিআই ও আইসিএআর অনুমোদিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে (‌ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস, ওয়েবসাইট:‌ https://www.wbuafsce.org/)‌ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ক্যাম্পাস— নদিয়া জেলার মোহনপুর এবং কলকাতার বেলগাছিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানেই ১৮৯২ সালে ব্রিটিশ সরকার ‘‌বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজ’‌ স্থাপন করেছিল। বর্তমানে ১২৫ বছরের ঐতিহ্যশালী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর ১০০ জন পড়ুয়া স্নাতকস্তরে ভর্তির সুযোগ পায়। পাশাপাশি, মোহনপুর ও বেলগাছিয়ায় দুটি আধুনিক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রাণী চিকিৎসা হাসপাতালে অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক ও শিক্ষকেরা বিভিন্ন প্রাণীর চিকিৎসা এবং প্রাণীপালন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক পরিষেবা দিয়ে থাকেন।

কোর্সের পাঠ্যসূচি
পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে ৫½ ব্যাচেলর্স ডিগ্রি কোর্সটি পড়ানো হয়। এর আগে এই প্রতিষ্ঠানটি বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজ নামে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই ডিগ্রি দিত। ৫½ বছরের পূর্ণাঙ্গ কোর্সের মধ্যে প্রথম ৪ বছরে প্রাণীবিজ্ঞানের ১৯টি বিষয়ে তাত্ত্বিক (‌থিওরি)‌ ও ব্যবহারিক (‌প্র‌্যাকটিক্যাল)‌ শিক্ষা দেওয়া হয়।
শেষ ১½ বছর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি প্রাণী চিকিৎসা হাসপাতালে শিক্ষানবিশ (‌ইন্টার্ন)‌ হিসেবে চিকিৎসা প্রণালী শেখার পর উত্তীর্ণ হলে স্নাতক ডিগ্রি পেয়ে প্রাণী চিকিৎসকের স্বীকৃতি পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০টি অনুমোদিত আসনের মধ্যে ৮৫টিতে নিট পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ মেলে। বাকি ১৫টি আসনে সারা ভারতের ছাত্রছাত্রীরা ভিসিআই কোটায় ভর্তি হতে পারেন। এরাজ্যের ছাত্রছাত্রীরাও এই নিয়মের সুযোগ নিয়ে অন্য রাজ্যের প্রাণী চিকিৎসা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ওপরে লেখা শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ভিসিআই কোটায় ভর্তি হতে পারেন। বর্তমানে এদেশে ১টি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান–সহ ৭৩টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫টি প্রাণী চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫১টি স্বীকৃত প্রাণী চিকিৎসা কলেজে ভিসিআই ও আইসিএআর কোটার মাধ্যমে সর্বভারতীয় প্রবেশিকা দিয়ে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর কোর্সে পড়ার সুযোগ মেলে। পড়ার খরচ একেবারে নগণ্য।
স্নাতক কোর্সে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ছাত্রছাত্রীরা আগ্রহী হলে স্নাতকোত্তর কিংবা গবেষণায় যেতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হতে পারেন। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা প্রাণী চিকিৎসার স্নাতক বিভাগের ১৫টি স্বীকৃত বিষয়, যেমন– সার্জারি, মেডিসিন, গাইনিকোলজি, প্যাথলজি, এক্সটেনশন এডুকেশন, প্যারাসাইটোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, প্রাণীপালন পরিচর্যা, পাবলিক হেল্‌থ, জেনেটিক্স ইত্যাদির মতো বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স (‌২ বছরের)‌ করতে পারেন। 
পরবর্তীতে গবেষণার রাস্তায় যেতে চাইলে স্নাতকোত্তর স্তরের যে কোনও বিষয়ের ওপর তিন বছরের পিএইচডি করা যেতে পারে। এছাড়া সর্বভারতীয় ‘‌নেট’‌ পরীক্ষা দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার রাস্তাও খোলা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজ্যের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি ফার্মাসির ওপর ২ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সও (‌ডিভিপি)‌ করানো হয়। ১০+‌২ বোর্ড পরীক্ষা বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ৩০টি আসনে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। এই কোর্স করা থাকলে রাজ্য সরকারের প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর অধীনস্থ প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট পদে নিয়োগ মিলতে পারে।
কর্মসংস্থানের দিশা
স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি কোর্সে উত্তীর্ণ হওয়ার পর একজন প্রাণী চিকিৎসক রাজ্য সরকারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের ব্লক, মহকুমা কিংবা জেলাস্তরীয় প্রাণী চিকিৎসা হাসপাতাল বা প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিযুক্ত হতে পারেন। এছাড়া গরু, ছাগল, ভেড়া, শূকর খামার, কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্র, স্বীকৃত মুরগি খামার, দুগ্ধ সমবায়, ব্যাঙ্কে বিশেষজ্ঞ আধিকারিক, পলিক্লিনিক ও প্রাণীরোগ নির্ণয় কেন্দ্র, ওষুধ ও টিকা উৎপাদন কেন্দ্রের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য গবেষণাগারে প্রাণী চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে পারেন।
ভারতীয় স্থলসেনা (‌আর্মি)‌, বর্ডার সিকিওরিটি ফোর্স (‌বিএসএফ)‌ তাদের ঘোড়া, কুকুর, উটের চিকিৎসার জন্য নিয়মিত প্রাণী চিকিৎসক নিয়োগ করে থাকে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে কোয়ারান্টাইন বিভাগের চিকিৎসক, কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে জুনোটিক রোগ নির্ণায়ক কিংবা দুগ্ধ ও প্রাণী সমবায়েও চিকিৎসক হিসেবে কাজ পাওয়া যায়।
স্নাতকোত্তর (‌এমভিএসসি)‌ এবং পিএইচডি করা থাকলে বিভিন্ন প্রাণী চিকিৎসা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক, গবেষক ও বিজ্ঞানী হিসেবে কিংবা ভারত সরকারের কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের বিভিন্ন গবেষণাকেন্দ্রে নিযুক্তির সুযোগ রয়েছে। আইসিএআর অনুমোদিত কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে প্রাণীবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজের সুযোগ র‌য়েছে।
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ওষুধ প্রস্তুতকারী ও গবেষণা সংস্থা, গবেষণাগার, চিড়িয়াখানা, বন্যপ্রাণী গবেষণাকেন্দ্র, কসাইখানা, জনস্বাস্থ্য গবেষণাগার, মাংস ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র, প্রাণী চিকিৎসা সম্পর্কিত সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থা, পুরসভা, বিমা সংস্থা, এনজিও–তেও প্রাণী চিকিৎসকদের চাহিদা রয়েছে। 
প্রাণী চিকিৎসা ও প্রাণীপালন বিষয়ক ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স করে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে গরু, ছাগল, ভেড়া, শূকর, মুরগি, হাঁস ও অন্যান্য লাভজনক প্রাণীর খামার তৈরি করে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন।
একজন রেজিস্টার্ড প্রাণী চিকিৎসক নিজস্ব ক্লিনিক খুলে প্রাণীদের চিকিৎসা ও টিকাকরণ, প্রকল্প তৈরি ও পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে স্বাধীনভাবে উপার্জন করতে পারেন।
জিআরই (‌GRE) কিংবা টিওইএফএল (TOEFL‌)‌ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিদেশে গবেষণার পাশাপাশি কর্মরত হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
একজন প্রাণী চিকিৎসক সরকারি প্রতিষ্ঠানে গ্রুপ ‘‌এ’‌ বিভাগে কর্মরত অবস্থায় প্রতি মাসে কমপক্ষে ৭০–‌৮০ হাজার টাকা থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থার ক্ষেত্রে মাসিক ১–১.২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। স্বনির্ভর উদ্যোগে ব্যবসায়িক খামার সফলভাবে চালাতে পারলে মাসে ৫০–৭০ হাজার টাকা উপার্জন করাও অনায়াসে সম্ভবপর।
শেষে বলা যায়, এই বিষয়টা শুধুমাত্র জীবন–জীবিকা নয়, বরং সামাজিক জটিলতার সরলীকরণ, স্বাস্থ্যবিধান, কর্মসংস্থান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সমাজ গঠনের অন্যতম দিশা হতে পারে। সঙ্গত কারণে, আগামী দিনগুলিতে প্রাণীপালন ও প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞান পেশাগত ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পন্থা হতে চলেছে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।‌‌‌




বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



06 24